Tuesday 28 February 2017

« রেশ... »


ছাড়াছাড়ির গতানুগতিকতাটা ভাঙা যাক |
উস্কোখুস্কো চুল,গালে দাড়ি,গায়ে গন্ধ,
ছেঁড়া নোংরা জিন্স...
তার বদলে
চলো,আমি সেলুনে যাই,তুমি পার্লারে |
যত্ন করে হেয়ার কালার,কেয়ারি ছাঁট ;
তোমার ধনুকমার্কা ভুরু,মাঝে এক বিন্দির গ্যাপ !

কিছু কেনাকাটা করা যাক...
নতুন হেডফোন,দামি হুইস্কি,
জগজিতের গজলের অ্যালবাম ;
তুমি সুগন্ধী (আমার প্রিয়'টা নয়),অরেঞ্জ লিপবাম |

তারপর ফোনের যত্ন |
একে ওকে তাকে হাই-হ্যালোর উত্তর,
আমি নতুন নতুন মেয়ে দেখতে থাকি,
তুমি পরপুরুষের দিকে তাকাও আড়চোখে...
এভাবেই চলতে থাকুক !

আসছে বসন্তে ঠিক দুজনে হাত ধরে হাঁটবো আবার ||

Sunday 26 February 2017

ll দু-পিঠে ll


এসো একটু অন্যভাবে খেলি।

এই ক'বছরে বেশ মাখামাখি হলো,
হাতের কাছে যা যা পেয়েছি, হাতড়ে মাখিয়েছি...
চড়, থাপ্পড়, স্পর্শ, আদর, লোভী লালা, চুমো, সিঁদুর !
এবার একটু কাদা মাখানো যাক।

একটা সাদা কাগজ দিলাম তোমায়, শর্ত
দু পিঠে দুজনে বিপরীতধর্মী শব্দ লিখবো।

তুমি লিখলে 'ঘেন্না'...

Saturday 25 February 2017

☆☆☆ভেসে গিয়েও...☆☆☆



সোনালী ধানক্ষেতের ফসল তোলা বাকী,
তখন,কেন কে জানে
বাঁধের মুখ খুলে দিয়ে ভাসিয়ে দিলে জমি-লাঙলের সংসার |

যারা ঘর বেঁধেছিল,অথবা বাঁধবে ভেবেছিল
একে অপরকে দোষে |

একপাশে অভিযোগ
একপাশে অভিমান

একজন একলাইন লিখলো,বাঁধভাঙা জলে, "চলি",
একজন একমুঠো জল হাতে নিয়ে ঠায়,আসার অপেক্ষায়

Friday 24 February 2017

☆ ফিরে গিয়ে...☆


যখন ট্রেনলাইন মিশতো জংশনে
ধুলোময় ঝড়,বাদাম শরবত,তীব্র হর্ন,
খাল টায় জল ছিলো না মোটে,
বরং ধারের ধাপিতে বসা যাক |

মনে আছে বিড়ির কাউন্টারের দমকা কাশি
কিভাবে থামিয়েছিলাম তোমার ?

একটা পাতামরা গাছের ছবি এঁকেছিলে
বেগুনি রঙের সিল্যুয়েটে,
লাল ঘোড়ার সওয়ারি এখনও ধুলো ওড়ায় সেখানে...
জানো,ঐ মরা গাছ টায়,যেখানে কাক সংসার পেতেছিলো,
নতুন পাতা এসেছে |

আচ্ছা ! কোকিল ডেকেছিল সেই বসন্তে ?

Tuesday 21 February 2017

★ উপলব্ধি ★

ঘৃণা কোরো না,ওতে ভোলা যায় না |
বরং,গঙ্গার ঘাটে চলো
সালোয়ার গুটিয়ে নাও গোড়ালির ওপর,
ছোট ছোট ঢেউ চুমু দিক পায়ের পাতায় |

এবার বলোতো,কিসের ঘৃণা ?
না পাওয়ার ? পেয়েছিলে তো !

হারিয়ে ফেলার ? স্বেচ্ছায় তো !

অসুখী থাকার ?

পায়ের পাতায় এসে জড়াবে একটুকরো কচুরিপানা,
যত্ন করে তোলো |
আগাছা সরিয়ে আদর করে কোলে রাখো,
পড়ন্ত বিকেলের কমলা আলোয় তাকাও,ভাসিয়ে দাও ওকে
কোলের থেকে | বিসর্জন...

অনুভূতিটা রয়ে গেলো,ভালোলাগার |

পরের বার তা বলে আগাছা হয়ো না,একসাথে ভাসার আশায় !
"শেষের সেই দিনটা..."
———————————

বিস্ফোরনের অপেক্ষা করছে গোটা বিশ্ব !
মানুষ-না'মানুষেরা প্রার্থনায়,নিঃশব্দ বিস্ফোরনের |
ঈশ্বর ও শয়তান বহু আগেই হার মেনে
ভিনগ্রহে,সহাবস্থানে |
বিস্ফোরনের আশঙ্কায় কাঁপছে সৃষ্টি...

পড়ে থাকবে শুধু কিশলয়রা,
রোদ-জল সামলে পর্ণমোচী হয়ে মহীরূহ হয়ে উঠবে একদিন |
তাদের কাছে আবার আশ্রয় নেবে পাখির দল,
শিউলি ঝরবে ঘাসের ওপর,
নদীতে ঢেউ |

বিস্ফোরনের ভয়ে লুকিয়ে থেকো না,বরং
দ্যাখো ! বিস্ফোরনের বিষ শরীরে মেখে
তাকিয়ে আছি তোমার দিকে,
একটা শেষ চুম্বন !

Monday 20 February 2017


☆সব চরিত্র কাল্পনিক—২☆
—————————————

বহুদিন খোঁজ নেই ইন্দ্রর |
"সব লণ্ডভণ্ড করে দেব" মাথাচাড়া দেয় সাঁঝবাতির | হাওড়া থেকে চেপে পড়ে ট্রেনে |
পৌঁছে পায়ে হেঁটে কলিংবেল...

মুখোমুখি তৃণা-সাঁঝবাতি !

ভেতরে এসো,চা খাবে ?
"না,কিছু কথা পরিস্কার করতে এসেছি | এখনই ফিরে যাব
ওকে ডেকে দাও একটু প্লিজ,তুমিও থাকো,সামনেই বলবো"

ডেকেছি,বলো ওকে যা বলার...
ইশারা ফ্রেমের দিকে,যেখানে ইন্দ্রর গালে তৃণা...

"মানে ?"

তৃণা উঠে যায় ফ্রেমের সামনে |
দুজন'কে পাশাপাশি দাঁড় করিয়ে দিলো,নিজে সামনে থেকে !
এটা বালিশের নীচে পেয়েছি,আজ বুঝলাম তোমার জন্যে ছিল |

মোড়ানো কাগজটা ট্রেনে বসে খোলে সাঁঝবাতি—
একটা সাদা পাতা,
একপিঠে ওপরে লেখা 'সাঁঝবাতি'
উল্টোপিঠে নীচে,ডানদিকে 'অরিন'


Sunday 19 February 2017

*** খোলা চিঠি ***


প্রিয় অমলকান্তি,
কেমন আছ ?

আজ নববর্ষ,
জানো,হাজার ব্যস্ততার-অব্যস্ততার মধ্যেও
আজ,কাল,রোজ মনে পড়ে তোমাকে |

আমরা যারা ডাক্তার,মোক্তার,আমলা হতে চেয়েছি
কেউ কেউ ভাল আছি,কিন্তু হাসি না |

তোমার যে বন্ধু থাকে জার্মানিতে-
ভাল নেই !
কোটি টাকার ঝলসানিতে ঝলসে গেছেন ওর বিধবা'মা,
হরিদেবপুরের বাড়িতে একাই থাকেন,
দুটো ফুটিয়ে খান,
রেডিও শোনেন,দিন গোনেন,হাসেন না...

আর সেই যে অধ্যাপক
লন্ডনের বড়ো ইস্কুলে খুব নাম,সোনার চশমা !
সন্ধেবেলা দামি হুইস্কির সাথে
কম আলোয় চোখে না পড়া ক'ফোঁটা জল গড়িয়ে আসে...
কি ভয়ানক লজ্জায় পড়েন নিজের কাছে !
ওর বাবাকে মনে আছে ?
পি.এফ এর টাকা উজাড় করে
বিলেতে পাঠিয়েছিলেন ছেলেকে,
পেসমেকার দুর্মূল্য হলো তারপর,
না হেসেই চলে গেলেন |
ও লন্ডন থেকে এসে লাশটার পায়ে হাত দিল,
প্রণাম,না ক্ষমা,জানি না...

আমি দামি টিভিতে তরুন রক্তের ব্যাটিং দেখি,
বিড়ি,উপহারে পাওয়া সিগারেট খাই,
হাসি না !

সকালে সাদা বাড়িটার দিকে যাওয়ার সময়
একমুঠো রোদ্দুর হেসে উঠল,,,
মাথার টুপি খুলে মুখে মেখে নেওয়ার সময়
চোখ বোজা সুখে দেখলাম
অমলকান্তি রোদ্দুর হয়ে ভাল আছে,হাসে
বিদেহী ৩

শীতের কামড় চারপাশে,
এখানে ওখানে ধুনি জ্বালিয়ে একটু উত্তাপের খোঁজে,মানুষ-অ-মানুষেরা
জমিয়ে রাখা ছবি ফেলে দিচ্ছে,আগুনের হাতে,
উত্তাপ জিইয়ে রাখার তাগিদে |

গাঙ্গেয় শ্মশানে পোড়া মাংসের গন্ধে দু রকম স্বাদ,
একটায় পিশাচ মাতোয়ারা
একটায় সমাজ দিশেহারা !

বিভিন্ন কোলাজ মনে করতে করতে
শীতে কাঁপতে কাঁপতে
ঘাট থেকে লোকালয়ের শর্টকাট শ্মশানের রাস্তা ধরে জোরকদম
চেনা অবয়বে আটকে গেল !
কবেকার ছাই হয়ে যাওয়া বিবস্ত্র হারামজাদা
নিজের রক্ত চেটে ভরা শীতে শরীর জিইয়ে রাখছে !

বিঠোফেনের ফিফথ সিম্ফনি ঝমঝম করে বাজছে

Saturday 18 February 2017

আচ্ছা শোনো !
সকালের ওষুধটা যেন একদিনও না ভুল হয় !
ব্রেকফাস্ট মিস করলে কথা বলবো না কিন্তু |
ও হ্যাঁ,ফিল্টারটা প্রতি পাঁচ দিন অন্তর পরিষ্কার কোরো,আর
সপ্তাহে একবার হেয়ার কালার,দু দিকের ছ-ছটা পাকা চুল ছেড়ে |
লেখালেখিটা,দ্যাখো না,যদি দিনের বেলাতেই সেরে রাখা যায় !
রাতে তোমার ঘুমের দরকার,ভীষণ,নইলে আমি দেখবো কেমন করে তোমায় ?
চোখের তলায় কালি পড়েছে... মনে আছে ? এরকম দেখলে আমি বলতাম 'আনস্যাটিসফায়েড' !
ভালো কথা,প্রতিবছর ১৫ই আগস্ট ৫১টাকার পুজোটা দিচ্ছো তো ?
রবিবার রবিবার এসপ্ল্যানেডে গিয়ে দুটো চা আর হাওয়া মিঠাই কিনো | একটা খেয়ো,একটা রেখে এসো...
"মাটির হোক,আমাকে একটা ছাদ দিও"
এখানে তারার ছাদ,দারুণ ! কিন্তু তোমায় ভাগ দেবো না |
.
আমি রোজ আসবো,যেমন আসি | তুমি দেখতে পাও না |
কোনোদিন দেখলে ভয় পেও না প্লিজ !
.
সাঁঝবাতি !
এবার,পরের বার,প্রতিবার...
.
.
তোমার অরিন
"খবর পড়ছি দেবদুলাল...”
.
আদালতের রায়ে
আজ দোকান-স্থাবর-অস্থাবরের নিলাম প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।
বিশেষ সংবাদ্দাতা দ্বারা জানা গিয়েছে
কাঁটাতার পেরোনো রিফিউজিকে পুনর্বাসিত করা হচ্ছে
“নো ম্যান্স ল্যান্ডে”;
সরকারি ও বেসরকারি নিয়মানুযায়ী
সঙ্গে একটি লোটা,কম্বল ও চিরকুট দেওয়া হবে,
লঙ্গরখানার থালা দেওয়ার দায়িত্ব কর্তৃপক্ষের না।
.
পরিচয়পত্রহীন হওয়ায় উক্ত উদবাস্তুকে
ভারতীয় দন্ডবিধির একাধিক ধারায় দন্ডিত করা হয়েছে,
আগামী ১১ই জানুয়ারী বেলা তিনটে তিরিশ মিনিটে
শাশ্তিদানের সময় মঞ্জুর করেছেন মহামান্য আদালত;
সুস্থ নাগরিবৃন্দ এই পদক্ষেপকে সাধুবাদ জানিয়েছেন।

.

বিশেষ সংবাদদাতা দ্বারা সদ্য জানা গিয়েছে
শাশ্তিদানের অনতিকাল পরেই উক্ত রিফিউজি
অনুদানের লোটা-কম্বল-চিরকুট না নিয়েই
নিরুদ্দেশ হয়েছেন...
নিলাম সংবাদ শেষ হলো,এবার নিরুদ্দেশ সম্বন্ধে ঘোষনা-
নিরুদ্ধেশ হওয়ার সময় পরনে ছিলো তামাটে রঙের পোষাক,
পরিভাষায় চামড়া,
শনাক্তকরন চিহ্ন ‘বুকের বাঁ’দিকে একটি গর্ত আছে,
পাঁজরের হাড় নেই।
.
খবর শেষ হলো।।